অবিশ্বাস্য! অপূর্ব! চোখ ধাঁধানো! তানজিদ হাসান তামিমের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস আর রিশাদ হোসেনের তাণ্ডবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তামিম ৮৪ রানের ইনিংসে গড়ে দিয়েছিলেন ম্যাচের গতিপথ, যা পরিণতি পেয়েছে মাত্র ১৮ বলে গড়া রিশাদের ৪৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে।
দিনের আলোয় ম্যাচ, শিশিরের প্রভাব নেই। লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস টস জিতে তাই সাতপাঁচ না ভেবে নিলেন ব্যাটিং। বাংলাদেশ দল একাদশে ফেরায় এনামুল হক বিজয়, মুস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেনকে। আগের ম্যাচ হারলেও শুরু থেকেই দল ছিল উজ্জীবিত। সিরিজ জিততে মরিয়া টাইগাররা সাফল্য পায় ম্যাচের শুরুতেই।
দ্বিতীয় ওভারে ভয়ংকর পাথুম নিসাঙ্কাকে ফিরিয়ে প্রথম উদযাপনের উপলক্ষ্য এনে দেন তাসকিন আহমেদ। চতুর্থ ওভারে ফেরান অভিষকা ফার্নান্দোকেও। দুই ওপেনার সিঙ্গেল ডিজিটে ফেরার পর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাউইকরামা। তবে একাদশে ফেরা মুস্তাফিজ ১৪ রান করা সাদিরা ও রিশাদ ২৯ রান করা কুশলের উইকেট শিকার করলে ৭৪ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। ৫ম উইকেটে চারিথ আসালঙ্কা ও জানিথ লিয়ানাগে গড়েন ৪৩ রানের জুটি। মুস্তাফিজ নিজের দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান ৩৭ রান করে আসালঙ্কা বিদায় নিলে। তাতে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপ অনেকটাই ভেঙে পড়ে।*
৭ নম্বরে নামা দুনিথ ওয়েল্লালাগে মনে করান টেস্টের নাইটওয়াচম্যানদের কথা। ১৮ বলে মাত্র ১ রান করে তিনি শিকারে পরিণত হন মেহেদী হাসান মিরাজের। মিরাজই সাজঘরে ফেরান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে। তবে লিয়ানাগের দৃঢ়চেতা ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কার পুঁজি দুইশ ছাড়ায়। বাংলাদেশের বোলার ফিল্ডারদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়ে আরও শতক তুলে নেন ফর্মে থাকা এই ক্রিকেটার।*
শেষপর্যন্ত ২৩৫ রানের পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ পায়নি সৌম্য সরকারকে, কনকাশনের কারণে তার বদলি হিসেবে নামেন তানজিদ হাসান তামিম। আর নেমেই বাজিমাত। এনামুল হক বিজয় একাদশে ফিরে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ২২ বলে ১২ রান করে বিদায় নেন তিনি, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত করেন মাত্র ১ রান। তবে তানজিদ দলকে ম্যাচে জিইয়ে রাখেন। ভাগ্যক্রমে সুযোগ পেয়ে খেলেন নিজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। মাত্র ৮১ বলের মোকাবেলায় ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৮৪ রান করে ক্ষান্ত হন। তার বিদায়ের পর চাপের মুখে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
৪০ বলে ২৫ রান করে মিরাজ সাজঘরে ফিরলে রিশাদ ক্রিজে নেমেই হাঁকান ছক্কা। ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় চোখের পলকে ম্যাচ শেষ করে দেন তিনি। মাত্র ১৮ বলে ৪৮ রান করে থাকেন অপরাজিত। বাংলাদেশ ম্যাচ ও সিরিজ জিতে নেয় ৫৮ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে।