মহান আল্লাহ পরম দয়ালু। তিনি বান্দার আমলের বিনিময়ে সগীরা গূনাহ মাফ করেন। তবে কবিরা গুণাহের ক্ষেত্রে তাওবা প্রযোজ্য। তবে এমন এক গুণাহ আছে যা আল্লাহ সহজে মাফ করেন না। আর তা হলো সবচেয়ে বড় কবিরা গুণাহ অর্থাৎ শিরক।
আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা সবচেয়ে বড় গোনাহ। আল্লাহ তাআলা শিরকের গোনাহ কখনো ক্ষমা করবেন না। সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে তুলনা করা কিংবা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করাই শিরক। এটাকে শিরকে আকবার বলা হয়। এটি সবচেয়ে বড় কবিরাহ গোনাহ। এ গোনাহের ধরন হলো এমন-‘যে কোনো প্রকারের ইবাদতকে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বা কিছুর জন্য নিবেদন করা। যেমন- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উদ্দেশ্যে বা নামে প্রাণী জবাই করা; প্রভু হিসেবে কারো ইবাদত করা।
আবার যদি কোনো ব্যক্তি ইবাদতের কিছু অংশে আল্লাহ ছাড়া অন্যের উদ্দেশ্যে করে থাকে তাও শিরক। আল্লাহ তাআলা শিরকে গোনাহের পরিণতি সম্পর্কে ঘোষণা করেন-إِنَّ اللّهَ لاَ يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَن يَشَاء وَمَن يُشْرِكْ بِاللّهِ فَقَدِ افْتَرَى إِثْمًا عَظِيمًا ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তার সঙ্গে শিরক করাকে ক্ষমা করবেন না। তবে শিরক ছাড়া অন্যান্য গোনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন। আর যে লোক আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার সাব্যস্ত করে; সে যেন অপবাদ আরোপ করে।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৪৮)
আল্লাহ তাআলা শিরক থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি এক ও একক। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন-‘আমি অংশিদারিত্ব (শিরক) থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। যে ব্যক্তি কোনো কাজ করে আর ওই কাজে আমার সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করে, আমি সেই ব্যক্তিকে তার শিরকে ছেড়ে দেই।’ (মুসলিম)
মনে রাখতে হবেআল্লাহ তাআলা ৭ শ্রেণির মানুষকে ধ্বংস করে দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি। তার মধ্যে প্রথম শ্রেণির মানুষ হলো তারা- যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক করে।তাছাড়া আল্লাহ তাআলা বান্দার সব গোনাহ ক্ষমা করলেও শিরকের গোনাহ ক্ষমা করবেন না বলে কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন।
অতএব প্রত্যেক মুসল্মানের উচিত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সকল প্রকার শিরক সম্পর্কে জানা এবং এ থেকে বেঁচে থাকা। মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে এই রমজানের উসিলায় মাফ করুন এবং জান্নাতের রাস্তা সুগম করে দিক সেই প্রার্থনায় আজকের মত ইতি টানছি।